স্টাফ রিপোর্টারঃ প্রায় ৯ বছর আগে কুয়েতের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ এক শ্রমিক আন্দোলনের মাধ্যমে তখনকার বাংলাদেশী শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে সক্ষম হয়েছিল।
যদিও সেসময় অধিকার আদায়ে শ্রমিকরা সফল হয়েছিল ঠিক’ই; কিন্তু সেজন্যে অনেক রক্ত ক্ষয়, তীব্র ঘাত-প্রতিঘাতের মোকাবেলা করে,মোটকথা কঠিন এক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল সেইসব শ্রমিকদের।
বোধকরি বর্তমান প্রেক্ষাপট খুব সহজেই মনে করিয়ে দিচ্ছে সেইসব শ্রমিকদের আন্দোলনের করুণ ইতিহাসের কথা, তখনকার শ্রমিকদের আন্দোলনে অর্জিত ফসল ছিল তুচ্ছ সেইসব শ্রমিকদের সীমাহীন লোকসানের কাছে। আজও সেইসব শ্রমিকদের কান্না কানে বাজে তথা এখনো সেইসব বেদনার স্মৃতি পীড়া দেয় প্রত্যক্ষদর্শীদের।
গত ২৫শে আগস্ট ২০১৬ইং কুয়েতের আল-তাওবাদ কোম্পানির ভিসা নিয়ে (শ্রমিকদের ভাষ্যমতে- মারাফিয়া কুয়েতিয়া কোম্পানিতে কর্মরত) ৯/১০ মাস আগে বাংলাদেশ থেকে আসা শতাধিক বাংলাদেশী শ্রমিকরা তাদের কর্মস্থল ত্যাগ করে আকামা সংক্রান্ত জটিলতা, গাদাগাদি করে অমানবিক পরিবেশে জীবনযাপন সহ অপরিশোধিত বেতন সম্পর্কিত বিষয় গুলো অবহিত করার লক্ষে কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের শরণাপন্ন হয়েছিল।এদিকে উক্ত শ্রমিকদের ব্যাপারে কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর আব্দুল লতিফ বলেন, সদ্য বাংলাদেশ থেকে আসা শ্রমিকরা যথা নিয়মানুসারে কুয়েতে আসেনেনি; ফলে বর্তমানের এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, যেকোনো ভিসা এখানে ইস্যু হলে অবশ্যই দূতাবাস কর্তৃক সেটি সত্যায়িত করিয়ে নিতে হয়; কিন্তু আজকের এই বিপদগ্রস্থ শ্রমিকদের ক্ষেত্রে তাদের ভিসা গুলো তখন দূতাবাস কর্তৃক সত্যায়িত করা হয়নি।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে নানা সমস্যায় বিপদগ্রস্থ এইসব শ্রমিকরা যেসব এজেন্টদের মাধ্যমে এখানে এসেছেন; সেসব এজেন্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে কুয়েতে বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দরা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, সদ্য বাংলাদেশ থেকে আসা শ্রমিকদের নানান সমস্যা ছাড়াও কিছু ক্লিনিং কোম্পানিতে কর্মরত পুরাতন শ্রমিকদের উপর আকামা ব্যয়ভার হিসেবে কোম্পানি কর্তৃক বিপুল পরিমাণের টাকা দাবী করে চলেছে, যেটি সম্পূর্ণ অবৈধ ও অনিয়মতান্ত্রিক বলে আখ্যায়িত করেন নেতৃবৃন্দরা।
কুয়েতে বেশ কিছু কোম্পানিতে কর্মরত শ্রমিকদের নানান সমস্যার প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী শ্রমিকদের লাগাতার আন্দোলন ও কর্মবিরতি অনেকটাই জানান দিচ্ছে আজ থেকে প্রায় ৯ বছর আগের সেই অনাকাংখিত পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি।
চলবে………………